প্রকাশিত: Mon, Dec 4, 2023 8:53 PM
আপডেট: Fri, May 9, 2025 5:10 PM

কুমিল্লার লালমাই পাহাড় ঘিরে অর্থনৈতিক সম্ভাবনা


শাহাজাদা এমরান,কুমিল্লা: [২] কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার বড় ধর্মপুর গ্রাম। এই গ্রামটির প্রায় পুরো অংশই পড়েছে পাহাড়ি এলাকা জুড়ে। গ্রামটির পাশেই কুমিল্লা সদর দক্ষিণ ও বরুড়ার উপজেলার সীমান্তে রয়েছে লালমাই পাহাড়ের চন্ডিমুড়া এলাকা। পাহাড়ের মাথায় চন্ডিমুড়ায় অবস্থান করছে সনাতন ধর্মাম্বলম্বীদের তীর্থ স্থান। আর এই তীর্থ স্থানের পাশেই বড় ধর্মপুর এলাকায় লালমাই পাহাড়ে ৬১ একর জায়গা জুড়ে ছিলো পরিত্যক্ত জঙ্গল। 

[৩] এই সম্পত্তির ৫২ একরের মালিক বন বিভাগ। জঙ্গলে পরিণত হওয়া বাকি জমি ব্যক্তি মালিকানাধীন। প্রায় তিন বছর আগেও দিনদুপুরেও মানুষজন এখানে যেতে ভয় পেতেন, পুরো স্থানটি ছিলো অপরাধী আর মাদক কারবারিদের অভয়ারণ্য। তবে গত কয়েক বছরের মধ্যে পাল্টে গেছে পুরোনো দৃশ্যপট। 

[৪] লালমাই পাহাড়ের সেই পরিত্যক্ত জঙ্গলকে ঘিরেই এখন খুলেছে সম্ভাবনার নতুন দ্বার। জীবনযাত্রায় পরিবর্তন এসেছে স্থানীয় এলাকাবাসীর। বন বিভাগের ৫২ একর আর স্থানীয়দের ৯ একর সম্পত্তি ইজারা নিয়ে পতিত জমির ব্যবহার ও বেকারদের কর্মমুখী করতে সেখানে গড়ে তোলা হয়েছে বড় ধর্মপুর মানবিক উন্নয়ন সংস্থা নামে একটি সংগঠন। মূলত ওই সংগঠনের ৮১ সদস্যের মাধ্যমেই লালমাই পাহাড়ের সেই পরিত্যক্ত জঙ্গলকে ঘিরে নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত হয়েছে। সেখানে পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। 

[৫] সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, চন্ডিমুড়ার ওই তীর্থ স্থানের পূর্ব পাশ ঘেঁষে পাহাড়ে একটি ইট বিছানো সড়ক প্রবেশ করেছে। সড়কটি দিয়ে একটু সামনে গেলেই চোখে পড়ে ছোট-বড় পাহাড় মাথা তুলে দাঁড়িয়ে আছে। সেখানেই এখন বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদনের জন্য বিভিন্ন ফলের গাছ লাগানো হয়েছে। রোপণ করা হয়েছে হাজার হাজার বনজ ও ঔষুধি গাছ। পাহাড়ের মাথায়ও রয়েছে ইট বিছানো পথ। মানুষজন সেখানে ঘুরতে আসছেন। পাহাড়ের দুটি টিলার মধ্যখানে তৈরি করা হয়েছে কৃত্রিম লেক। সেখানে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ চাষ করা হচ্ছে। এছাড়া সেখানে চাষ হচ্ছে বিভিন্ন প্রকারের শাক-সবজিও। পুরো প্রকল্প এলাকাটিতে কাজ করেই স্থানীয়রাই। এতে দূর হচ্ছে বেকারত্ব।  

[৬] বড় ধর্মপুর মানবিক উন্নয়ন সংস্থার ব্যবস্থাপক মো.আবুল কাশেম জানান, আগে এখানে দিনের বেলায় মানুষ আসতে ভয় পেত। গত ৫০/৬০ বছরেও এখানে কেউ যায়নি ভয়ে। তবে পুরো এলাকাটি ছিলো চোর-মাস্তান আর মাদক কারবারি-মাদকসেবীদের অভয়ারণ্য। আমাদের সংগঠনের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান গোলাম সারওয়ার। প্রকল্প এলাকাটিতে তাঁর নিজেরও কিছু জায়গা রয়েছে। মূলত তাঁর উদ্যোগের কারণেই সেই পরিত্যক্ত জঙ্গলকে ঘিরে নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত হয়েছে।